in

চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলের বিখ্যাত শিক্ষার্থীগণ

চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলের বিখ্যাত শিক্ষার্থীগণ

চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল ১৮৩৬ সালে ব্রিটিশ সরকার প্রথমে ‘চট্টগ্রাম গভর্নমেন্ট স্কুল’ নামে এটি প্রতিষ্ঠা করেন। চট্টগ্রামে এটাই প্রথম ইংরেজি উচ্চ বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়েছিল চকবাজার প্যারেড ময়দানের দক্ষিণে ও মাদ্রাসা পাহাড় (বর্তমান মহসিন কলেজ)-এর পূর্বদিকস্থ ইংরেজ আমলের প্রথমদিকে নির্মিত একটি পাকা দালানে।

১৮৬৯ সালে সেখানে সরকারি এফ.এ কলেজ প্রতিষ্ঠিত হলে বিদ্যালয়টি মার্কট সাহেবের পাহাড়ের দক্ষিণ প্রান্তে বর্তমান সরকারি মুসলিম হাই স্কুলের দক্ষিণ পার্শ্বে একটি পাকা ভবনে স্থানান্তর করা হয়।

১৮৮৬ সালে বিদ্যালয়টি আইস ফ্যাক্টরি রোডে বর্তমান স্থানে পুনঃস্থাপন করা হয় এবং নাম পরিবর্তন করে চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল রাখা হয়।

এ বিদ্যালয়ের প্রথম অধ্যক্ষ ছিলেন মি. কুন্ডু। উনিশ শতকের জনপ্রিয় কবি নবীনচন্দ্র সেন এ বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। বিশ শতকের প্রথম দশক পর্যন্ত বিদ্যালয়টি এন্ট্রাস স্কুল নামেই জনসাধারণের মধ্যে পরিচিত ছিল।

চট্টগ্রামে ইংরেজি শিক্ষা বিস্তারের অন্যতম অগ্রদূত ডা. অন্নদাচরণ খাস্তগীর এ বিদ্যালয় থেকেই এন্ট্রাস পাস করেন। গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহাম্মদ ইউনুস, লেখক ড. হুমায়ূন আহমেদ এ বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন।

১৯৯২ সালে স্কুলটি জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ স্কুল হিসেবে পুরস্কৃত হয়।

অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তি এ স্কুলে পড়ালেখা করেছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন,

ছৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভান্ডারী: সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভান্ডারী ছিলেন (১৯২৮-১৯৮৮) মাইজভান্ডারী তরীকার এবং শাহেনশাহ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভান্ডারী কাদ্দাছা ছিরহুল আজিজ নামে ডেকে থাকে।প্রথমদিকে গৃহ শিক্ষক মৌলভী মোজাম্মেল হকের নিকট তিনি আরবী বর্ণমালা ও কলমা শিক্ষা লাভ করেন।

এরপর মাইজভান্ডার আহমদীয়া জুনিয়র মাদ্রাসায় তিনি তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত পড়ালেখা করেন। পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তি হয়ে নবম শ্রেণী পর্যন্ত তিনি পড়াশুনা করেন নানুপুর আবু সোবহান হাই স্কুলে। তৎপরবর্তীতে নবম ও দশম শ্রেণীর পাঠ শেষে চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল হতে এ্যান্ট্রেন্স বা প্রবেশিকা পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হলে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার্জনের উদ্দেশ্যে ভর্তি হন চট্টগ্রাম কলেজে।

ড. মুহাম্মদ ইউনুস: অধ্যাপক ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা। মুহাম্মদ ইউনূস এবং তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংক যৌথভাবে ২০০৬ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন। তিনি প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে এই পুরস্কার লাভ করেন।

চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পরীক্ষায় মুহাম্মদ ইউনূস মেধা তালিকায় ১৬তম স্থান অধিকার করেন এবং চট্টগ্রাম কলেজে ভর্তি হন। সেখানে তিনি সাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক কর্মকান্ডের সাথে নিজেকে যুক্ত করেন। কলেজে তিনি নাটকে অভিনয় করে প্রথম পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়াও তিনি সাহিত্য পত্রিকা সম্পাদনা এবং আজাদী পত্রিকায় কলাম লেখার কাজে যুক্ত ছিলেন।

ডা. আফছারুল আমীন: জন্ম: ১ জানুয়ারি ১৯৫২। বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ ও ২৮৭ নং (চট্টগ্রাম-১০) আসন থেকে নির্বাচিত জাতীয় সংসদ সদস্য। তিনি ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি তারিখে অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একজন “সংসদ সদস্য” হিসাবে নির্বাচিত হন।

জামাল উদ্দিন আহমেদ: জামাল উদ্দীন আহমেদের জন্ম চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি থানার দৌলতপুর গ্রামের জুরাগাজী পরিবারে। তার পিতা ডা: ফজলুল করিম, যিনি চট্টগ্রাম জেলার প্রথম মুসলিম ডাক্তারদের মধ্যে অন্যতম। তার বড় ভাই ডা: কামাল উদ্দীন আহমেদ ছিলেন চিকিৎসা বিজ্ঞানের একজন গবেষক।

তিনি ১৯৭৭ থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের উপপ্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন।

ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন: জন্ম – ১২ জানুয়ারি ১৯৪৩, একজন বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ, বীর মুক্তিযোদ্ধাও প্রথম সারির শিল্পপতিদের অন্যতম। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সংসদ সদস্য ও সরকারের গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রনালয়ের সাবেক মন্ত্রী।

তিনি চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল থেকে মেট্রিকুলেশন পাশ করেন। ১৯৬২ সালে স্যার আশুতোশ কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় পাশ করেন। ১৯৬৬ সালে লাহোরের ইঞ্জিনিয়ারিং ও কারিগরী বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি সম্পন্ন করেন।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী: একজন বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী এবং সাবেক মন্ত্রী। তিনি ১৯৯১ সালে চট্টগ্রাম-৮ আসন থেকে উপনির্বাচনে প্রথমবারের মত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং ২৫ মার্চ ২০০৪ পর্যন্ত মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

এম মোরশেদ খান: মোরশেদ খান ১৯৪০ সালের ৮ আগস্ট চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা চট্টগ্রামেই অর্জন করেন। ১৯৬২ সালে তিনি জাপানের টোকিও কৃষি ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং অর্থনীতিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। এছাড়াও তিনি সোফিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা ইন-ইন্ডাস্ট্রিয়াল ম্যানেজমেন্টে পড়াশোনা করেন।

মোরশেদ খান ২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রীর দ্বায়িত্ব পালন করেন।

এছাড়া আরো যাদের যাদের নাম পাওয়া গেছে

সাবেক বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু

জনপ্রিয় লেখক ও সুস্থ ধারার চলচ্চিত্র নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদ

প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ ও বিজ্ঞানী ড. জামাল নজরুল ইসলাম

লেখক ও শিক্ষাবিদ ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল

ভারত কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি জেএম সেনগুপ্ত

পূর্ব পাকিস্তানের সাবেক গভর্নর জাকির হোসেন

ড. মনোয়ার হোসেন

ড. মুস্তাফা নূরউল ইসলাম

লেখক ও বিজ্ঞানী আবদুল্লাহ আল মূতি শরফুদ্দীন

নাট্যকার আবুল হায়াত

আতাউর রহমান

কবি নবীন চন্দ্র সেন

আবৃত্তিকার-স্থপতি কাজী আরিফ

আন্তর্জাতিক গ্র্যান্ডমাস্টার নিয়াজ মোর্শেদ

জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক আশীষ ভদ্র

জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু

কবি ময়ূখ চৌধুরী

সংসদ সদস্য মাঈনুদ্দিন খান বাদল

তত্ত্ববধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও চিটাগাং রিসার্চ ইনশিয়েটিভের চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান।

নোট: অনিচ্ছাকৃতভাবে কেউ এই তালিকা থেকে বাদ পড়ে গেলে আমাদেরকে জানাবেন 

What do you think?

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

চট্টগ্রাম জেলার পোস্টকোড

চট্টগ্রাম জেলার পোস্টকোড

চট্টগ্রামের রেলওয়ে জাদুঘর

চট্টগ্রামের রেলওয়ে জাদুঘর