রাজধানী ফতেয়াবাদ : গৌড়ের সুলতান হোসেন শাহ্’র আমলে ১৫১৫ খ্রিষ্টাব্দের প্রথমার্ধে আরাকানরাজ গৌড় অধিকৃত চট্টগ্রাম দখল করে নিয়ে সুলতান হোসেন শাহ, যুবরাজ নশরত শাহকে চট্টগ্রাম অভিযানে পাঠান। তিনি চট্টগ্রাম পুনরুদ্ধার করে চট্টগ্রামের নতুন নাম দেন ‘ফতেয়াবাদ’। এবং আধুনিক চট্টগ্রাম শহর থেকে ৮ মাইল উত্তরে তাঁর অধিকৃত চট্টগ্রামের রাজধানী ফতেয়াবাদের পত্তন করেন। সে সময় ফতেয়াবাদ নগরীতে রূপান্তরিত হয়। ষোল শতকের চট্টগ্রামের কবি দৌলত উজির বাহরাম খাঁ রচিত লায়লী মজনু কাব্যে বর্ণিত কবির আত্মপরিচিতিতে ফতেয়াবাদের বর্ণনা দিয়েছেন :
নগর ফতেয়াবাদ
দেখিয়া পুরএ সাধ
চাটিগ্রাম সুনাম প্রকাশ ।
মনোহর মনোরম
অমর নগর সম
শতে শতে অনেক নিবাস ।
লবণাম্বু সন্নিকট কর্ণফুলী নদী তট
শুভপুরী অতিদিপ্যমান ।
যুবরাজ নশরত শাহ্ স্থাপিত চট্টগ্রামের শাসনকেন্দ্র ফতেয়াবাদস্থিত দিঘি, প্রাসাদ ও মসজিদ সম্পর্কে হামিদুল্লাহ খাঁ লিখেছেন যে, নশরত শাহ্’র দিঘিটি দৈর্ঘ্যে সাত শ কদম কিন্তু ভরাট হয়ে গেছে। নশরত শাহ্ মসজিদখানি তিনি ভগ্ন অবস্থায় দেখেছেন এবং তাঁর জন্মের আগে প্রাসাদের ধ্বংসস্তূপে বিষধর সর্পের উৎপাত দেখা দেওয়ায় স্থানীয় জনসাধারণ পুড়িয়ে দেয়।
হোসেনশাহি বংশের পতনের পর ফতেয়াবাদ ধ্বংস হয়ে যায়। নশরত শাহ্’র রাজত্বকালেই বন্দর শহর চট্টগ্রামে পর্তুগিজ দৌরাত্ম্য আরম্ভ হয়।
– হামিদুল্লা খান, আহাদিসুল খাওয়ানীন, পৃ. ১৭-১৮
– ড. আহমদ শরীফ সম্পাদিত দৌলত উজির বাহরামখার লায়লী মজনু, পৃ. ১০৩ ।
– ড. আবদুল করিম, চট্টগ্রামে ইসলাম, পৃ. ৫৩ ।
– বন্দর শহর চট্টগ্রাম – আবদুল হক চৌধুরী
Comments